ঢাকা সোমবার ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
কুষ্টিয়া কুষ্টিয়ায় চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে সাপের কামড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৩৯৩ জন মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৩ জনকে বিষধর সাপ দংশন করেছে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সের সূত্র।
এছাড়া অক্টোবরের আগে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনমের মজুদ না থাকায় সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়েন চিকিৎসকরা। সংকটের কথা স্বীকার করে বিকল্প ব্যবস্থাসহ প্রান্তিক এলাকায় সতর্কতা বাড়ানাের উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ১৫৫, দৌলতপুরে ৭৫, কুমারখালীতে ১, মিরপুরে ৫২, ভেড়ামারায় ৯৩, খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৭জন জেনারেল হাসপাতাল ও একজন দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২জন। বাকিদের হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত ২৮ অক্টোবর সিভিল সার্জন অফিসের পাওয়া তথ্যনুযায়ী,দৌলতপুরে ৬৩,মিরপুরে ১০,ভেড়ামারায় ৩০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম মজুদ থাকলেও জেনারেল হাসপাতাল,কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা স্বাস্ত্য কমপ্লেক্সে কোন অ্যান্টিভেনম মজুদ নেই জানানো হয়।
যদিও নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০ ভায়ালের উপর অ্যান্টিভেনম কেনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম জানান,এ অঞ্চলে বিষধর সাপের মধ্যে মূলত গোখরা, কালাচ এবং রাসেল ভাইপার অন্যতম। “যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের বেশিরভাগকেই হাসপাতালে আনার ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা পেলে অনেক মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব ছিল।”তিনি আরও বলেন, মুলত গ্রামাঞ্চলে সচেতনতার অভাব, কুসংস্কারের কারণে ঝাড়ফুঁক করার প্রবণতা সাপের কামড়ে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। অ্যান্টিভেনম সংকটের বিষয়ে আরএমও বলেন,হাসপাতালের নিজস্ব তহবিল থেকে সরবরাহকারী প্রতিষ্টানের কাছ থেকে ৫০ ভায়ালের উপর অ্যান্টিভেনম কেনা হয়েছে। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন নাগরিক টেলিভিশনকে বলেন,যে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের চুক্তি ছিল সেই প্রতিষ্ঠান কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন ও সরবরাহ করতে পারছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা দেখছেন। তিনি বলেন, এখন আর চাহিদাপত্র দেওয়ার সুযোগ নেই। বিকল্প হিসেবে হসপাতালগুলোতে বাজেট দিয়ে দেওয়া হবে। তারা তাদের প্রয়োজন অনুসারে অ্যান্টিভেনম কিনে ব্যবহার করবেন। এছাড়া প্রান্তিক এলাকাগুলােতে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :